কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে সিসিএনএফ ও কোস্ট ট্রাস্ট এর মানববন্ধন এবং আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়েছে।
কক্সবাজারে সিসিএনএফ ও কোস্ট ট্রাস্ট এর উদ্যোগে ১০ডিসেম্বর সকাল ১০ ঘটিকায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মুখে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে মানবন্ধন ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেছেন মকবুল আহমদ, সহকারি পরিচালক-কোস্ট ট্রাস্ট। মানববন্ধন ও আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মিজানুর রহমান, সদস্য সচিব-হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার্স ফোরাম, রিজিয়া বেগম, সভাপতি-কর্মজীবী নারী, ইলিয়াস মিয়া, প্রধান পরিচালক-কক্সবাজার পরিবেশ ও মানবাধিকার উন্নয়ন ফোরাম, আবুল কাসেম, নির্বাহী পরিচালক-হেল্প কক্সবাজার, তরিকুল ইসলাম- প্রধান নির্বাহী একলাব, মোঃ হারুন, কো-অর্ডিনেটর-ইপসা, দিপক বড়–য়া, পরিচালক-উন্নয়ন ফাউন্ডেশন কক্সবাজার, জাহাঙ্গীর আলম-ব্র্যাক, কামাল উদ্দীন রহমান পিয়ারু সদস্য জলবায়ু ফোরাম কক্সবাজার ও সমাজ কর্মী, দিদারুল আলম রাশেদ, নির্বাহী পরিচালক,নোঙ্গর, এ্যাড. আব্দুর শুক্কুর, প্যানেল আইনজীবী, জেলা লিগ্যাল এইড, প্রকৌশলী বদিউল আলম, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, এছাড়াও মেঘনা ফাউন্ডেশন, জালালাবাদ ফাউন্ডেশন, মহেশখালী উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পুরো সভাটি সঞ্চালনা করেন মিজানুর রহমান বাহাদুর।
মকবুল আহমদ তার বক্তব্যে বলেন-সকল ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে জাতিসংঘের মানবাধিকার সনদ অনুযায়ী বাংলাদেশের সংবিধান রচিত হয়েছে। আমাদেরকে আমাদের অধিকার সম্পর্কে জানতে হবে, বুঝতে হবে এবং এই সকল অধিকার নিয়ে সচেতন হতে হবে। এ্যাডভোকেট আব্দুর শুক্কুর তার বক্তব্যে বলেন,আমরা আমাদের অধিকার নিয়ে সচেতন নয়। মায়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের নির্যাতন করে চরম মানবাধিকার লংঘন করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে প্রায় দশ লক্ষ রোহিঙ্গা এখন টেকনাফ এবং উখিয়াতে বসবাস করছে। এইটাই মানবাধিকার লংঘনের জলন্ত উদাহারন।
ইলিয়াস মিয়া, প্রধান পরিচালক,কক্সবাজার পরিবেশ ও মানবাধিকার উন্নয়ন ফোরাম তার বক্তব্যে বলেন,কক্সবাজার এখন বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ মানবাধিকার লংঘিত স্থান। এখানকার জনগনের মানবিক জীবন যাপন এখন বিশ্ববাসী জানে। বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার ফলে এখানকার জনগন তাদের সব ধরনের অধিকার ও নিরাপত্তা হারিয়ে ফেলেছে এবং এর পাশাপাশি ধ্বংস হয়েছে প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং বন। আমাদের পরিবেশ ও অধিকার রক্ষায় দেশি বিদেশী সব মহলের সহযোগীতা আশা করছি।
আবুল কাসেম, নির্বাহী পরিচালক, হেল্প কক্সবাজার বলেন,আমরা জাতিগত ভাবে পূর্বে থেকেই আমাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছি। এখন সময় আমাদের সচেতন হওয়ার। আমাদের সামাজিক সুরক্ষা ও অধিকার বিষয়ে জানতে হবে। সমাজের প্রত্যেক স্তরের মানুষকে নাগরিক অধিকার বিষয়ে জানতে হবে এবং অন্যদেরও এই বিষয়ে সচেতন করতে হবে।
তরিকুল ইসলাম, প্রধান নির্বাহী, একলাব বলেন,আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সভা সেমিনার করে থাকি মানবিক এবং সামাজিক বিষয় গুলোকে গুরুত্ব দিয়ে কথা বলে থাকি। জাতি বা মানুষ হিসেবে আমাদের কি কি অধিকার রয়েছে এবং কোথায় থেকে আমাদের কি অধিকার আদায় করার সুয়োগ রয়েছে তা আমাদের গ্রামের অনেক মানুষ এখনো জানেনা। আমাদের একটি অন্যতম কাজে হচ্ছে তাদের এই বিষয়ে জানানো এবং তাদেরকে সচেতন করা। তবেই আমাদের অধিকার দ্রুত অর্জন করা সম্ভব হবে।
কামাল উদ্দীন রহামান পিয়ারু, সদস্য জলবায়ু ফোরাম তিনি বলেন,উখিয়া এবং টেকনাফের পর নাফ নদী তার ওপারে মায়ানমার এর মংডু যেখানে রোহিঙ্গাদের বসবাস। সেখানকার জনগনও সরকার মিলে রোহিঙ্গাদের ব্যাপক হত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতন এবং অপহরণ চালিয়েছে। দিশেহারা হয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। রাষ্ট্র দ্বারা জাতি যে চরম মানবাধিকার লংঘনের স্বীকার হয়েছে এট হচ্ছে একটি জলন্ত প্রমাণ বিশ্বের কাছে। বাংলাদেশ তথা বিশ্বব্যাপী মানবজাতি প্রতিনিয়ত নির্যাতিত ও বঞ্চিত হচ্ছে।
দিদারুল আলম রাশেদ, প্রধান নির্বাহী, নোঙ্গর বলেন,আমাদের মধ্যে সচেতনতার আগ্রহ আরো সঞ্চারিত করা জরুরী। আমরা সাধারণ মানুষের অধিকার রক্ষার কাজে অংশগ্রহন করতে চায়না। আমাদের অধিকার নিয়ে আমরা সচেতন হতে চায়না। এটি আমাদের চরম অসচেতনতা। আমাদের এধরনের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের সময় এখন। কক্সবাজারের যেন ক্ষতি না হয় সে দিকে আমাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। রাজনৈতিক প্ররোচনা বা বিদেশীদের ষড়যন্ত্রে যেন কক্সবাজার ধ্বংসের কবলে না পড়ে সেদিকে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।
ইঞ্জিনিয়ার বদিউল আলম সর্বশেষ বক্তা হিসেবে তার বক্তব্যে বলেন-সাধারণ মানুষের পাশাপাশি আমাদের মধ্যে অনেক শিক্ষিত মানুষও মানবাধিকার বিষয় সম্পর্কে জানেনা। সচেতনতার জায়গায় আমাদের অনেক কাজ করতে হবে। আমরা আমাদের মানবিক অধিকার সম্পর্কে না জানলে এবং সচেতন না হলে প্রতিনিয়ত আমরা আমাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে থাকবো। তিনি সিসিএনএফ এবং কোস্ট ট্রাস্টকে ধন্যবাদ জানান আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে মানববন্ধন এবং আলোচনা সভার আয়োজন করার জন্য।
Photos
Newslink