A network of local CSOs and NGOs in Cox’s Bazar to promote a human and gender responsive society through positive engagement with government.

কক্সবাজারে সুপেয় পানি ও আবাদী জমি পুনরুদ্ধারে জাতিসংঘের বিনিয়োগের দাবি
৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ রোহিঙ্গা সম্মেলনের আগে কোস্ট ফাউন্ডেশনের মতবিনিময় সভা।

কক্সবাজার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫: আসন্ন ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে রোহিঙ্গা বিষয়ক সম্মেলনের আগে কক্সবাজার শহরের অরুণোদয় স্কুলের অডিটরিয়ামে কোস্ট ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভা ও সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা সুপেয় পানি সংকট নিরসন, আবাদী জমি পুনরুদ্ধার ও কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিনিয়োগের আহ্বান জানান। সংবাদ সম্মলেনে সভাপতিত্ব করেন কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক জনাব এম. রেজাউল করিম চৌধুরী। পুরো অনুষ্টানটি সঞ্চালনা করেন কোস্ট ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম। উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, উখিয়া কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অজিত দাস, সাবেক এপিপি সাকী এ-কাউসার, বিশিষ্ট লেখক রুহুল কাদের বাবুল, সেইভ দ্য কক্সবাজারের সভাপতি তৌহিদ বেলাল, অধিকার কক্সবাজারের সভাপতি এডভোকেট আবু মুসা মোহাম্মদ, পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান মুজাফফর আহমেদ, হেল্প কক্সবাজারের নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেমসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের বন্ধুগণ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কোস্ট ফাউন্ডেশন নির্মিত বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে পানি ও আবাদি জমি উপর প্রভাব এবং বর্জ্য সৃষ্টির প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এতে দেখা যায়, উখিয়া ও টেকনাফে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ মিলিয়ন লিটার ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করা হচ্ছে, ফলে প্রতিবছর পানির স্তর ৪ থেকে ১২ মিটার নিচে নেমে যাচ্ছে। বিশেষত টেকনাফে ভূগর্ভস্থ পানির ৬৫ শতাংশে লবণাক্ততা পাওয়া গেছে। একসময় যেখানে ৮০-৯০ ফুট নিচে পানি পাওয়া যেত, বর্তমানে ১,০০০ ফুট গভীরেও বিশুদ্ধ পানি মিলছে না। প্রামাণ্যচিত্রে আরও জানানো হয়, উখিয়া ও টেকনাফে প্রতিমাসে প্রায় ১০,০০০ টন বর্জ্য তৈরি হচ্ছে। অন্যদিকে কক্সবাজার পৌরসভা এলাকায় প্রতিদিন ৯০ থেকে ১৩০ টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়, যার ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ আসে পর্যটকদের মাধ্যমে।
সভায় জানানো হয়, রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে আসা বর্জ্যের কারণে উখিয়া-টেকনাফ এলাকায় প্রায় ৩০০ একর আবাদি জমি নষ্ট হয়ে গেছে। এই জমি যদি চাষযোগ্য থাকত, তবে প্রতিবছর প্রায় ৩০,০০০ টন ফসল উৎপাদন সম্ভব হতো। প্রামাণ্যচিত্রে সম্ভাব্য সমাধান হিসেবে বর্জ্য আলাদা করে সার ও রিসাইক্লিং পদ্ধতি, মল থেকে সার তৈরি, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ, পরিত্যক্ত পুকুর পুণখনন, ভূগর্ভস্থ পানির সীমিত ব্যবহার এবং নাফ নদী বা সমুদ্রের পানি লবণমুক্ত করে রোহিঙা শিবিরে সরবরাহের প্রক্রিয়ার ওপর জোর দেওয়া হয়।
রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “বর্জ্যকে শক্তিতে রূপান্তর করতে হবে। কক্সবাজার শহরে বৈজ্ঞানিক ও পদ্ধতিগতভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা চালু করা জরুরি। পচঁনশীল বর্জ্য সার হিসেবে এবং অপচনশীল বর্জ্য রিসাইকেল করে অর্থনৈতিকভাবে কাজে লাগানো সম্ভব।”
মাহবুবুর রহমান বলেন, কক্সবাজার শহর তথা উখিয়া ও টেকনাফের বিকল্প সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা, স্থায়ীভাবে বর্জ্য শোধনাগার তৈরি করা এবং ক্যাম্প সংলগ্ন অনাবাদি থাকা জমিগুলো পুনরায় আবাদি করার ব্যবস্থা করা জরুরি।”
অজিত দাস বলেন, রোহিঙ্গা আগমনের কারণে বিশেষ করে ক্যাম্প সংলগ্ন প্রচুর মানুষ তাদের আবাদি জমি হারিয়েছেন, সেসব জমিতে আর ফসল ফলানো সম্ভব হচ্ছে না। যেহেতু রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না, তাই তাদের জমিগুলো ফিরিয়ে দিতে হবে, এর জন্য দাতা সংস্থা ও সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করেন।”
আবুল কাশেম বলেন, উখিয়া টেকনাফে রোহিঙা ক্যাম্পের জমি পূনtরুদ্ধারে আমাদের সোচ্চার হতে হবে, সে জমিতে পূনরায় চাষ নিশ্চিত করতে হবে।
মোজাফ্ফর আহম্মেদ জানান, পালংখালীতে ২৫টি রোহিঙ্গা ক্যাম্প আছে, যার ফলে ভূগর্ভস্থ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা ৭০০ ফুট নিচে খনন করেও পানি পাচ্ছি না, যা পাওয়া যাচ্ছে তাতে লবণাক্ততা পাওয়া যাচ্ছে।
এরফান হোসেন জানান, প্লাস্টিক কখনও মাটির সাথে মিশে যায় না, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। উন্নত দেশগুলোতে ১ টন প্লাস্টিকের বর্জ্য থেকে ১৩ লিটার ডিজেল উৎপাদন সম্ভব বা ১০০ হাজার প্লাস্টিক সিলিন্ডার তৈরি করা সম্ভব। তিনি দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্পের মাধ্যমে তা বাস্তবায়নের জন্য জাতিসংঘসহ দাতা সংস্থাগুলোকে দায়িত্ব নিতে হবে, যাতে করে কক্সবাজারের পরিবেশ রক্ষা হয়।”
সাকি এ কাওসার বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে হোস্ট কমিউনিটির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও রোহিঙ্গাদের জন্য নাফ নদীর পানি ট্রিটমেন্ট করে সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।”

Please download press release [Bangla] [English]

Photos

Newslink

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *